সকলটা খেটে খুটে দুপুর বেলায় দক্ষিণ দিকের বারান্দায় একটা বিছানা পেতে একটু শুয়েছি। তন্দ্রাটি যেই এসেছে— অমনি মুখের উপর খপ ক'রে কি একটা পড়ল। তাড়াতাড়ি উঠে দেখি একটা কদাকার কুৎসিত, পাখীর ছানা। লোম নেই-ডানা নেই-কিম্ভূত কিমাকার ! রাগে ও ঘৃণায় সেটাকে উঠোনে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম। কাছেই একটা বেড়াল যেন অপেক্ষা করছিল-টপ করে মুখে করে নিয়ে গেল। শালিক পাখীদের আর্তরব শোনা যেতে লাগল।
অামি এপােশ ওপাশ করে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।
তারপর চার পাঁচ বছর কেটে গেছে !
আমাদের বাড়ীতে হঠাৎ একদিন আমারই বড় আদরের একমাত্র ছেলে শচীন হঠাৎ সর্পাঘাতে মারা গেল। ডাক্তার- কবরেজ-ওঝা-বৈদ্যি কেউ তাকে বাঁচাতে পারলে না । শচীন জন্মের মত আমাদের ছেড়ে চলে গেল ।
বাড়ীতে কান্নার তুমুল হাহাকার।
ভিতরে আমার স্ত্রী মূৰ্ছিত অজ্ঞান। তাকে নিয়ে একজন লোক শশব্যস্ত হয়ে উঠেছে। বাইরে এসে দেখি দড়ির খাটিয়ার ওপর শুইয়ে বাছাকে নিয়ে যাবার আয়োজন হচ্ছে।
তখন বহুদিন পরে— কেন জানিনা— সেই পাখির ছানাটার কথা মনে পড়ে গেল ।
সেই চার পাঁচ বছর আগে নিস্তব্ধ দুপুরে বেড়ালের মুখে সেই অসহায় পাখীর ছানাটা, আর তার চারদিকে পক্ষীমাতাদের আর্ত হাহাকার । হঠাৎ যেন একটা অজানা ইঙ্গিতে শিউরে উঠলাম।
0 comments:
Post a Comment
[বি:দ্র: এই সাইটের বেশির ভাগ লেখা ছোটদের জন্য, তাই দয়া করে এমন মন্তব্য করবেন না যাতে করে আমাদের ক্ষুদে পাঠকদের মানসিকতার উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। ধর্ম নিয়ে কিংবা এমন কোন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে মন্তব্য না করার জন্য অনুরোধ রইল। যদি গল্পটি ভালোলোগে তবে নিশ্চয় মন্তব্য করুন, আপনার সুগভীর মন্তব্য অন্যকে গল্পটি পড়তে অনুপ্রাণিত করবে। ] ধন্যবাদ